৬৮ মামলায় জর্জরিত সিলেট বিএনপি, আসামি কয়েক হাজার - All News Paper

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Monday, January 22, 2024

৬৮ মামলায় জর্জরিত সিলেট বিএনপি, আসামি কয়েক হাজার

 ২২ জানুয়ারি, ২০২৪ ১১:৫৫

 নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট


সরকার পতনের দাবিতে একদফার আন্দোলনে সিলেটে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৬৮টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় আসামি হয়েছেন কয়েক হাজার নেতাকর্মী। কারাগারে বন্দি আছেন প্রায় ৩০০ জনের মত। আর ফেরারি জীবনযাবন করছেন বাদবাকিরা। সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। 


কারণ হিসেবে দেখা গেছে, বিএনপির ডাকে টানা দুই মাসের আন্দোলনে অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাই রাজপথে বেশি সক্রিয় ছিলেন। তবে আন্দোলনের শুরু থেকেই মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীকে আইনি সহায়তা দিচ্ছে যাচ্ছে ‘আইনি সহায়তা সেল’। এবারের আন্দোলনে বিএনপির উদ্যোগে গঠিত এই সেলের ভূমিকা প্রশংসা কুড়াচ্ছে নেতাকর্মীদের মধ্যে।  


বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের আন্দোলনের মামলায় এখনো অনেকে আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন, কোনটি শেষ হয়েছে কিংবা শেষ হওয়ার পথে। কিংবা কারো জেল হয়েছে। পুরনো মামলার বুঝা শেষ হতে না হতেই নতুন মামলার ‘টেনশন’ শুরু হয়েছে তাদের মাঝে। যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের কাউকে নেওয়া হচ্ছে রিমান্ডে। একের পর এক মামলার কারণে আসামিদের জেল থেকে আদালত আর আদালত থেকে জেলে নেওয়া হচ্ছে, এমন চিত্র সিলেটের আদালত পাড়ায় গেলেই চোখে পড়ে। আর এতে আসামি ছাড়াও ভোক্তভোগী হচ্ছেন তাদের পরিবারের সদস্যরাও। পরিবারের সদস্যদেরও আদালতে দেখা যায় প্রতিনিয়ত।      

গত ২৮ অক্টোবর থেকে সিলেটে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে সিলেট মহানগরীতে। মহানগরের কোতোয়ালি থানায় ১৫টি, মোগলাবাজার থানায় ১০টি, দক্ষিণ সুরমা থানায় ৯টি, এয়ারপোর্ট থানায় ৬টি, জালালাবাদ থানায় ৬টি, শাহপরান থানায় ৩টি মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়া গোলাপগঞ্জে ৩, বিশ্বনাথে ২, ওসমানীনগরে ২, গোয়াইনঘাটে ৩, জৈন্তাপুরে ৩, কোম্পানীগঞ্জে ২, কানাইঘাটে ১টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে। গাড়ি ভাঙচুর, নাশকতা-বিস্ফোরক মামলা, রেলে আগুন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসসহ বিভিন্ন কারণে এসব মামলা হয়েছে। তবে বিএনপি নেতাদের ভাষ্য-গায়েবী মামলা, ঘটনাস্থলে অনুপস্থিত এমনকি বিদেশে অবস্থানকারীদের বিরুদ্ধে পর্যন্তও এসব মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।  


গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশের দিন সিলেটে প্রথম মামলা দায়ের হয় সিলেটের জকিগঞ্জ থানায়। ঢাকার মহাসমাবেশে সংঘর্ষের প্রতিবাদে ঐরাতেই কালিগঞ্জ বাজারে মিছিল বের করেছিল স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এরপরে জকিগঞ্জে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।


পরদিন ২৯ অক্টোবর হরতাল চলাকালে দুপুরে মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্ববায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকিকে তার বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। শুরু হয় পুলিশের ধরপাকড় অভিযান। 


বিএনপি নেতারা জানান, কারাগারে এখনো অন্ত্যত ৩০০ জন বন্দি আছেন। তাদের মধ্যে শীর্ষ নেতাকর্মীদের মধ্যে আছেন- সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, জেলা যুবদলের সভাপতি মুমিনুল ইসলাম মুমিন, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল আহাদ খান জামাল, মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, সদস্য সচিব আফসর খান, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান প্রমুখ।  


তবে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে ছাত্রদল নেতা আফসানের বিরুদ্ধে। তার নামে মহানগরের বিভিন্ন থানায় ২০টি মামলা দায়ের হয়েছে। জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনারের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা দায়ের হয়েছে। তিনি এখনো ফেরারি জীবনযাপন করছেন। এছাড়া মহানগর মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আফসর খানের বিরুদ্ধে ১৩টি, আহ্বায়ক মাহবুবুল হকের বিরুদ্ধে ৭টি, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ৫টি, খান জামালের বিরুদ্ধে ৪টি, সাবেক কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েছ লোদীর বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানায় বিএনপির আইনি সহায়তা সেল।


এছাড়া ২৮শে অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশের দিন পুলিশ হত্যা মামলায় সিলেটের তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন-সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামিম, মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী ও জেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু।


মামলা প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী জানান, নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তাসহ সকল ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে দল। এবারের আইনি সহায়তা সেল আন্দোলনের সময় নেতাকর্মীদের মাঝে বড় সাহস ঝুগিয়েছিল বলে জানান বিএনপির এই নেতা। এই সহায়তা সেলে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের ভূমিকা প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।


বিডি প্রতিদিন/আরাফাত


আরও পড়ুন:

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages