৪৩ পেরিয়ে ‘টাইটানিক-কন্যা’
বিনোদন ডেস্ক
হলিউড অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট। ‘টাইটানিক-কন্যা’ নামে যার সমধিক পরিচিতি। এ ছবির মাধ্যমে কেবল হলিউডে নয়, পুরো বিশ্বে পরিচয় পান কেট। ৪৩ পেরিয়ে ৪৪-এ পা রাখলেন এ তারকা। নিজের জন্মদিনটা একেবারেই এবার সাদামাটাভাবে পালন করলেন।
কেটের পরিবার ছিল সংস্কৃতিমনা। বাবা রজার উইন্সলেট এবং মা স্যালি ব্রিজেস উইন্সলেট-দুজনই মঞ্চের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মূলত বাবা-মায়ের হাত ধরেই কেট অভিনয়ে আসেন। ১৯৯১ সালে বিবিসির হয়ে শিশুদের একটি সায়েন্স ফিকশনের মধ্য দিয়ে অভিনয় শুরু করেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের রেডরুফস ড্রামা স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয় কেট উইন্সলেটকে। তখন থেকে এই নায়িকার অভিনয় শেখা শুরু। আর ওই সময়ে অভিনয়টা খুব ভালো রপ্ত করেন তিনি। ১১ বছর বয়সে অভিনয় শেখার জন্য তিনি ‘রেডরফ থিয়েটার’ স্কুলে ভর্তি হন। এমনকি হেভেনলি ক্রিয়েচার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য কেট ১৭৫ জন মেয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে জয়ী হন। এবং এ ছবিতে কাজের সুযোগও পান। পরে ছবিটি ৫১তম ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে বছরের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এই বয়সে একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে প্রথম কাজ করেন কেট।
এরপর মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি ‘হেভেনলি ক্রিয়েচার’ নামে একটি চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। যার গল্প আবর্তিত হয়েছিল দুজন মেয়ের একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে।
এরপরই পরিচালক জেমস ক্যামেরনের নজরে পড়েন। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেট হয়ে ওঠেন দুনিয়ার অন্যতম দর্শকনন্দিত নায়িকাদের একজন। টাইটানিকে আকাশচুম্বী সফলতা পাওয়ার পর কেট একের পর এক রোমান্টিক ছবিতে নাম লেখান। সেই ধারাবাহিকতায় উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের লেখা অবলম্বনে কেনেথ বানাথের পরিচালনায় নির্মিত ‘হ্যামলেট’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আবারো বিশ্বব্যাপী তাক লাগিয়ে দেন। এরপর ২০০৪ সালে মুক্তি পায় কেটের ‘ফাইন্ডিং নেভারল্যা’ সিনেমাটি। আর ২০০৬ সালে নির্মিত মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লিটেল চিলড্রেন’ নিজেকে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়। এতে একজন পর্নস্টারের স্ত্রীর চরিত্রে অমায়িক অভিনয়শৈলী প্রদর্শন করেন। সে বছর টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘অ্যাকট্রাস’-এ নিজের চরিত্রের ব্যঙ্গাত্মক সংস্করণে অভিনয় করে এমি পুরস্কার ঝুলিতে তুলেছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে ‘দ্য রিডার’ ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন কেট। এটিই তার প্রথম আর এখন পর্যন্ত একমাত্র অস্কার। আর তিনি কিনা এটি রেখে দিয়েছিলেন তার স্নানঘরে। বাইরে থাকলে কেউ এটি চুরি করে নিয়ে যেতে পারে, এই ভয়ে।
এছাড়াও কেটের রেভ্যুলেশনারি রোড, দ্য রিডার, ডাইভারজেন্ট, এ লিটল সস, ট্রিপল নাইন, দ্য ড্রেসমেকার ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। কেট উইন্সলেটকে অভিনয়ে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১২ সালে কমান্ডার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (সিবিই) উপাধি দেওয়া হয়। সর্বশেষ দুই বছর আগে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে অস্কার অর্জন করেন।
চরিত্রের প্রয়োজনে ১৫টি ছবিতে নগ্ন হতে হয়েছে কেট উইন্সলেটকে। কেট একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, গল্পের প্রয়োজনে গায়ের কাপড় খুলতে তার কোনো সমস্যা নেই। নিজের শরীর দেখাতেও কোনো অস্বস্তি বোধ করেন না তিনি। জনপ্রিয় সিনেমা ‘লর্ড অব দ্য রিংস: দ্য টু টাওয়ারস’-এ রাজকুমারীর চরিত্রে অভিনয়ের কথা ছিল কেট উইন্সলেটের। কিন্তু পিটার জ্যাকসনের প্রস্তাবটি পরে ফিরিয়ে দেন কেট। এরপর মিরান্ডা অটোকে নেওয়া হয় সেই চরিত্রে। নিজের চরিত্রে অভিনয় করেও পুরস্কার জিতেছেন কেট উইন্সলেট।
বর্তমান প্রজন্মের ‘পারফেক্ট শেপ’ ধারণা নিয়ে উদ্বিগ্ন কেট উইন্সলেট। তার কথায়, বর্তমান প্রজন্ম যেমন ‘পারফেক্ট শেপ’ অর্থাৎ শরীরটাকে নিজের মতো করে গড়ে তোলা ধারণার পেছনে ছুটছে, তাতে তাদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ নিয়ে আমি সত্যিই উদ্বিগ্ন। এটা আসলে প্রাকৃতিক একটা প্রসেসকে একেবারে থমকে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। আর এটার একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও তো পড়ে। সুন্দর শারীরিক গঠন চাই-এটার পেছনে মিডিয়ার ভূমিকাও তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মিডিয়া তো এটাকে ফলাও করে প্রচার করে চলে। তিনি মূলত সুন্দর শারীরিক গঠন ধরে রাখতে, তার জন্য নিজেকে উজাড় করে তার পেছনে ছোটার অনেকটাই বিরোধিতা করেছেন।
Post Top Ad
Responsive Ads Here
Sunday, October 6, 2019
৪৩ পেরিয়ে ‘টাইটানিক-কন্যা’
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Post Bottom Ad
Responsive Ads Here
Author Details
Templatesyard is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design. The main mission of templatesyard is to provide the best quality blogger templates which are professionally designed and perfectlly seo optimized to deliver best result for your blog.


No comments:
Post a Comment