নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লা
![]() |
| চৌদ্দগ্রামের সীমান্তবর্তী গ্রামের এক জামায়াত নেতার যে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সম্রাটকে। ছবি: দেশ রূপান্তর |
যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাট গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সীমান্তবর্তী একটি গ্রামে এক জামায়াত নেতার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে।
ক্যাসিনো ও জুয়াবিরোধী অভিযানের পর আত্মগোপনে চলে যান সম্রাট। শনিবার মধ্যরাতে চৌদ্দগ্রামের সীমান্তবর্তী কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামে জামায়াত নেতা মনির চৌধুরী ওরফে ছক্কা মনিরের বাড়ি থেকে র্যাবের হাতে আটক হন সম্রাট।
জানা গেছে, সম্রাটের আশ্রয়দাতা বাড়ির মালিক মনির চৌধুরী ওরফে ছক্কা মনির বর্তমানে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হলেও বিএনপি সরকারের সময় জামায়াতের প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৫ থেকে ৬ দিন ধরে এ বাড়িতে অবস্থান করছেন সম্রাট ও আরমান। আলকড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক হেলাল জানান, যে বাড়িতে সম্রাট আশ্রয় নিয়েছেন ওই বাড়ির মালিক মনির চৌধুরী জামাত শিবিরের সমর্থক ছিলেন। ফেনী পৌর-মেয়র মো. আলাউদ্দিনের ভগ্নিপতি তিনি।
গোলাম ফারুক দেশ রূপান্তরকে জানান, জামায়াতের নেতাদের বিভিন্ন রকম দায়িত্ব থাকে। মনির চৌধুরী জামায়াত ইসলামীর সকল কাজে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করতেন। জামায়াতের সঙ্গে মনির চৌধুরীর জড়িত থাকার বিষয়টি আরও নিশ্চিত করেন আলকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন। তিনি জানান, বিভিন্ন সময়ে জামায়াত ইসলামীর কর্মকাণ্ডে মনির চৌধুরীকে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, এলাকায় না থাকলেও গত শুক্রবারে আলকড়া মসজিদে নামাজ পড়েন মনির চৌধুরী। বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে তালাবদ্ধ ছিল।
ওই বাড়ির পাশে থাকেন রাজমিস্ত্রি শহিদুল ইসলাম। তিনি দেশ রূপান্তরকে জানান, দীর্ঘদিন বাড়িটি বন্ধ ছিল, গত কয়েক দিন বেশ কয়েকজনকে যাতায়াত করতে দেখেছি।
তিনি জানান, বাড়ির ভেতরে থাকা দুটি পুকুরে মাছ ধরতেন ৪ থেকে ৫ জন লোক, মাঝে মধ্যে মাছের খাবারের জন্য বাড়ির পাশের দোকানে আসতে দেখেছি।
এলাকার বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরে অপরিচিত লোকজন বাড়িটিতে আস-যাওয়া করেছে। বাড়ির বাইরেও অনেককে ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন এলাকাবাসী।
ওই বাড়িটির আশ-পাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল ইসমাইল হোসেন সম্রাট ও আরমানের। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্যই এই বাড়িতে অবস্থান নেন তারা। চোরাই পথে সম্রাটকে ভারতে যেতে সহযোগিতা করছিলেন মনির চৌধুরী। রবিবার যে কোন সময় কুঞ্জশ্রীপুর হয়ে ভারতে পাড়ি জমাতেন ক্যাসিনো সম্রাট।
মনির চৌধুরীর ভাই মানিক চৌধুরী জানান, শনিবার রাত ৯টায় দুটি গাড়ি এসে বাড়িটির সামনে দাঁড়ায়। এর আধা ঘণ্টা পর বেশ কয়েকটি র্যাবের গাড়ি বাড়ির সামনে অবস্থান নেয় এবং র্যাব সদস্যরা পুরো বাড়িটিকে ঘিরে ফেলে। রাত ১২টার কিছুক্ষণ পর সম্রাট ও আরমানকে নিয়ে চলে যায় র্যাব সদস্যরা। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সকাল পর্যন্ত বাড়ির সামনে অবস্থান করে।


No comments:
Post a Comment