এবার সড়কের ওপর পাকা ‘ট্রাফিক পুলিশ বক্স’ - All News Paper

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Monday, January 29, 2024

এবার সড়কের ওপর পাকা ‘ট্রাফিক পুলিশ বক্স’

 ড্রিঞ্জা চাম্বুগং

ঢাকা

আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪: ২৪

শিয়া মসজিদ মোড়ের যেখানে রিং রোড ও তাজমহল রোড এসে মিলেছে, সেখানে রাস্তার ওপর ইট-সিমেন্ট দিয়ে পাকা করে একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ২৪ জানুয়ারিছবি: জাহিদুল করিম

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শিয়া মসজিদ মোড় এলাকায় সড়কের ওপর ট্রাফিক পুলিশের একটি বক্স (অস্থায়ী কার্যালয়) নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে। আগে সেখানে স্টিলের কাঠামোর বক্স ছিল। সেটিকে ভেঙে এখন সেখানে ইট-সিমেন্ট দিয়ে পাকা বক্স করা হচ্ছে।


ঢাকার রাস্তাঘাট-ফুটপাতের মালিক সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন। কর্মকর্তাদের ভাষ্য, নিয়ম হলো, সেখানে কোনো স্থাপনা নির্মাণে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের অনুমোদন নেওয়া বা সংস্থাকে অবগত করা। মোহাম্মদপুর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-৫-এর আওতাধীন এলাকা। ডিএনসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, শিয়া মসজিদ মোড় এলাকায় সড়কের ওপর ট্রাফিক পুলিশের পাকা বক্স নির্মাণের বিষয়ে তাঁরা অবগত নন।

শিয়া মসজিদ মোড় এলাকার সড়কে ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মাণের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান ডিএনসিসির অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ।

অন্যদিকে ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, জায়গাটিতেই আগেই একটি বক্স ছিল। এখন শুধু সেটিকে সংস্কার করা হচ্ছে। তা ছাড়া সড়কের এই অংশ যান চলাচলের কাজে লাগে না।


গত বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, শিয়া মসজিদ মোড়ের যেখানে রিং রোড ও তাজমহল রোড এসে মিলেছে, সেখানে রাস্তার ওপর নতুন করে একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মাণের কাজ চলছে। মোড়ে সড়ক বিভাজকে একটি বটগাছ আছে। গাছটির পরেই রাস্তা। সেখানেই ইট-সিমেন্টের কাঠামো দিয়ে পাকা করে বক্সটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ইটের গাঁথুনি ও ছাদ ঢালাইয়ের কাজ ইতিমধ্যে শেষ। এখন বাকি শুধু বালু-সিমেন্টের আস্তর দেওয়া।


শিয়া মসজিদ মোড় এলাকার সড়কে ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মাণের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান ডিএনসিসির অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ। তিনি গত বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জানামতে এই বক্সের কোনো অনুমতি নেই। সংস্থার প্রধান কার্যালয় থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না, তা–ও আমি জানি না। অন্যত্র (প্রধান কার্যালয়) থেকে অনুমতি দেওয়া হলে অনুলিপি দিয়ে বিষয়টি অঞ্চল-৫-কে জানানোর কথা।


ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, জায়গাটিতেই আগেই একটি বক্স ছিল। এখন শুধু সেটিকে সংস্কার করা হচ্ছে। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ২৪ জানুয়ারিছবি: জাহিদুল করিম
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ নিজেদের প্রয়োজনে যেসব বক্স তৈরি করে, তার জন্য তারা সাধারণত কোনো অনুমতি নেয় না। এ কারণে ঢাকার কোথায় কতগুলো এমন স্থায়ী-অস্থায়ী কাঠামোর পুলিশ বক্স আছে, তার সুনির্দিষ্ট হিসাব সিটি করপোরেশনে নেই।

তবে ডিএনসিসির ট্রাফিক প্রকৌশল শাখার পক্ষ থেকে সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

ডিএনসিসির ট্রাফিক প্রকৌশল শাখার তত্ত্বাবধানে ইতিমধ্যে দুটি ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। এর একটি ফার্মগেটে, অন্যটি গুলশান-১ নম্বরে ফজলে রাব্বী পার্কসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত।

এ ছাড়া মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, জাহাঙ্গীর গেট, তেজগাঁও লাভ রোড ও বিজয় সরণিতে আরও ৫টি ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসিসি।

ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, জায়গাটিতেই আগেই একটি বক্স ছিল। এখন শুধু সেটিকে সংস্কার করা হচ্ছে। তা ছাড়া সড়কের এই অংশ যান চলাচলের কাজে লাগে না।
শিয়া মসজিদ মোড় এলাকায় সড়কের ওপর বক্স নির্মাণের বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেখানে আগেই বক্স ছিল। আমরা সেটাকে নতুন করে সংস্কার করছি। সেখানে ওয়াশরুম (শৌচাগার) যুক্ত করা হচ্ছে। এ রকম বক্স সারা শহরেই আছে। সিটি করপোরেশন এসব জানে।’

বক্সটি নির্মাণের ব্যয়ভারের বিষয়ে জানতে চাইলে মোস্তাক আহমেদ বলেন, বিষয়টি ‘ইন্টারনাল’ (অভ্যন্তরীণ)।

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যাল-কেন্দ্রিক ট্রাফিক পুলিশের অনেক বক্স চোখে পড়ে। এর কোনোটি হয় ফুটপাতের জায়গায়, নয়তো রাস্তার মাঝে সড়ক বিভাজকের ভেতরে তৈরি।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অনুমতি ছাড়া যেখানে-সেখানে নির্মাণ করা কয়েকটি পুলিশ বক্স ভেঙে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে সংস্থাটিকে।

অনুমতি ছাড়া রাজধানীর আসাদগেটে সড়ক বিভাজকের জায়গায় নির্মাণ করা ট্রাফিক পুলিশের একটি বক্স ভাঙতে গত বছরের জানুয়ারিতে অভিযানে গিয়েছিলেন ডিএনসিসির কর্মকর্তারা। কিন্তু তাঁরা ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের বাধায় বক্সটি উচ্ছেদ করতে পারেননি।

ডিএনসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, শিয়া মসজিদ মোড় এলাকায় সড়কের ওপর ট্রাফিক পুলিশের বক্স নির্মাণের বিষয়ে তাঁরা অবগত নন। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ২৪ জানুয়ারিছবি: জাহিদুল করিম
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনের ফুটপাতে বানানো ট্রাফিক পুলিশের দুটি বক্স ২০২২ সালের জুলাইয়ে ভেঙে দেয় ডিএনসিসি। সেদিন অভিযানকালে ঘটনাস্থলে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম উপস্থিতি ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএনসিসির এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ নিজেদের প্রয়োজনের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ফরমাশে এসব বক্স নির্মাণ করে। রাজধানীর অধিকাংশ ট্রাফিক পুলিশ বক্স কোনো না কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা বিজ্ঞাপনী সংস্থার অর্থায়নে করা। বক্স নির্মাণের পর সেখানে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages