নিজস্ব প্রতিবেদক, একাত্তর
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৪:৩০ পিএমআপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৪:৩০ পিএম
শিল্প কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সম্মতির হার আরও কমিয়ে প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
রোববার সচিবালয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের লেবার অ্যাটাশে লিনা খান ও ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) ম্যাথু বেহের সাথে বৈঠকের পর আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।
ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সম্মতি বা স্বাক্ষর নেওয়ার হার পর্যায়ক্রমে কমিয়ে প্রক্রিয়া সহজ করা হবে বলে তাদের জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।
মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, শ্রমিক অধিকার নিয়ে তারা তাদের বক্তব্য বলেছেন। এই আলোচনা কিন্তু গত বছর থেকে তাদের সঙ্গে আমাদের হচ্ছে। সময়ে সময়ে যে অগ্রগতি হয়েছে এবং আরও কোনো অগ্রগতি সম্ভব কি না, সেটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে থাকি। সেই চলমান আলাপ আলোচনার একটা পদক্ষেপ হিসেবেই আজকে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিলো, রাষ্ট্রপতির কাছে যে শ্রম আইনটা গিয়েছিলো, সেটি একটি বিশেষ কারণে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণটা আগেও আপনাদের ব্যাখ্যা করেছি। সেই ব্যাপারটা আলোচনায় এসেছে।
সম্প্রতি জাতীয় সংসদে পাস হওয়া বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল-২০২৩ অনুসারে কোনো প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকের মোট সংখ্যা তিন হাজার পর্যন্ত হলে, সেখানে ট্রেড ইউনিয়ন করতে ২০ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতি লাগবে। আর মোট শ্রমিকের সংখ্যা তিন হাজারের বেশি হলে ১৫ শতাংশের সম্মতি লাগবে।
অবশ্য মুদ্রণজনিত ভুলের কারণে রাষ্ট্রপতি সংসদে পাস হওয়া বিলে সম্মতি না দিয়ে ফেরত দিয়েছিলেন।
মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিরা কি ট্রেড ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতির কথা বলেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, এটি সাধারণত ১০ শতাংশ। আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি, আমাদের এমপ্লয়ার্স এবং ওয়ার্কার্স ফেডারেশন যেগুলো আছে, তারা সব সময় বলে আসছে আস্তে আস্তে কমানোটাই তাদের জন্য ভালো হবে। বাংলাদেশের শ্রমিকের অধিকারের ক্লাইমেট (পরিবেশ) অনুযায়ী এটি কমানো হবে। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। সে জন্য আমরা আস্তে আস্তে কমানোর ব্যাপারে গুরুত্ব দেব।
আনিসুল হক বলেন, থ্রেস হোল্ড (ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের স্বাক্ষরের হার) সম্বন্ধে এবং অন্যান্য ইস্যু সম্বন্ধে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছেন, এই ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে পার্টনার হিসেবে কাজ করতে চায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকদের অধিকারের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন, এটা তাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু। তখন আমি বলেছি, এটা বাংলাদেশ সরকারের কাছেও এবং আওয়ামী লীগের সরকারের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে এবার প্রধানমন্ত্রী শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়টা নিজের হাতে রেখেছেন।
আনিসুল হক বলেন, আমি এটাও বলেছি, আগামী বুধবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটা টিমের সঙ্গে আলোচনায় বসবো। আইএলওর গভর্নিং বডির মিটিং হচ্ছে মার্চ মাসে, আমাদের অগ্রগতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল হওয়ার জন্য এবং দু’একটা বিষয় তারা জানতে চেয়েছেন, সেই মিটিং এরপরে তাদের আমরা জানাবো। আমাদের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি বা এমন কিছু তোলেনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূসকে নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি।
থ্রেস হোল্ড নিয়ে তাদের বক্তব্য কী, এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, থ্রেস হোল্ড নিয়ে তাদের বক্তব্য আছে, এটা সব সময়ই ছিলেঅ। থ্রেস হোল্ডের ব্যাপারে আমি বলেছি, এটা আমরা ১৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। সেখানে একটা কন্ডিশন আছে এটা শুধু এপ্লিক্যাবল হবে যে ফ্যাক্টরিতে তিন হাজার বা এর বেশি শ্রমিক আছে সেখানে। সেটার ব্যাপারে একটা আলোচনা হতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, তারা এটাও বলেছেন, তিন হাজার বা তিন হাজারের বেশি শ্রমিক আছে এমন কারখানা অনেক কম। এই ব্যাপারে যখন প্রশ্ন এসেছে তখন আমি বলেছি, এটা নিয়ে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এটা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
তারা কী শ্রমিকদের স্বাক্ষরের হার ১০ শতাংশ চাইছে, এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘এটা জেনারেল ইয়ে যে ১০ শতাংশ, আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি, আমাদের ইমপ্লয়ার্স এবং ওয়ার্কার্স ফেডারেশন যেগুলো আছে তারা সব সময় বলে আসছে আস্তে আস্তে কমানোটাই তাদের জন্য ভালো হবে। বাংলাদেশ শ্রমিকের অধিকারের ক্লাইমেট অনুযায়ী এটা কমানো হবে। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। সেজন্য আমরা আস্তে আস্তে কমানোর ব্যাপারে গুরুত্ব দেবো।
কেএসএইচ


No comments:
Post a Comment